অব্যয় পরিচয়
সদৃশং ত্রিষু লিঙ্গেষু সর্বাসু চ বিভক্তিষু ।
বচনেষু চ সর্বেষু যন্ন ব্যেতি তদব্যয়ম্ ।।
যে পদের তিন লিঙ্গে, সকল বিভক্তিতে এবং তিন বচনে কোনরূপ পরিবর্তন হয় না তাকে
অব্যয় বলে। যার ব্যয় অর্থাত্ ক্ষয় অর্থাত্ পরিবর্তন হয় না তা হল অব্যয়। এই সকল
অব্যয়গুলির মধ্যে আবার কিছু অব্যয় পূর্ববর্তী পদের ওপর প্রভাব ফেলে। এই প্রভাবী
এবং অপ্রভাবী অব্যয়গুলি নীচে উদাহরণ ও অর্থসহ প্রস্তুত করা হল –
অপ্রভাবি অব্যয়
(নীচে আলোচ্যমান
অব্যয়গুলি অনুসারে কোনো পদের বিভক্তি পরিবর্তিত হয় না)
1.
এব- ই - রামঃ এব গচ্ছতি। রামই যাচ্ছে।
2.
অপি- ও - শ্যামঃ অপি গচ্ছতি। শ্যামও যাচ্ছে।
3.
ইব- মতো - চন্দ্রঃ ইব মুখং শোভতে। চাঁদের মতো মুখটি শোভা পাচ্ছে।
5.
অত্র – এখানে - রামঃ অত্র বসতি। রাম এখানে থাকে।
6.
তত্র – সেখানে - শ্যামঃ তত্র বসতি। শ্যাম সেখানে থাকে।
7.
সর্বত্র – সবজায়গায় - বাযুঃ সর্বত্র অস্তি। বায়ু সবজায়গায় আছে।
8.
অন্যত্র – অন্যজায়গায় - চন্দ্রঃ অন্যত্র অস্তি। চাঁদ অন্য জায়গায়/অন্যখানে আছে।
9.
ইহ – এখানে - ইহ জনাঃ ন বসন্তি। এখানে মানুষেরা বসবাস করে না।
10.
অদ্য – আজ – অদ্য বিদ্যালয়ং শিক্ষকঃ ন গচ্ছতি। আজ স্কুলে শিক্ষক
যাচ্ছেন না।
11.
শ্বঃ – আগামীকাল – শ্বঃ মাতুলঃ গৃহম্ আগমিষ্যতি। আগামীকাল বাড়িতে
মামা আসবেন।
12.
পরশ্বঃ – আগামী পরশু – পরশ্বঃ মাতুলঃ গৃহাৎ গমিষ্যতি। আগামী পরশু মামা
বাড়ি থেকে যাবেন।
13.
প্রপরশ্বঃ – আগামী পরশুর পরের দিন – প্রপরশ্বঃ মাতুলস্য গৃহং গমিষ্যামি। আগামী
পরশুর পরের দিন আমি মামার বাড়ি যাবো।
14.
হ্যঃ – গতকাল – হ্যঃ অহং গৃহং ন অগচ্ছম্। গতকাল আমি বাড়ি যাইনি।
15.
পরহ্যঃ- গত পরশু – পরহ্যঃ মাত্রা সহ কলহঃ অভবৎ। গত পরশু মায়ের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল।
16.
প্রপরহ্যঃ – গত পরশুর পরের দিন – প্রপরহ্যঃ অহং গৃহে চৌরকার্যং কৃতবান্। গত
পরশুর আগের দিন আমি ঘরে চুরি করেছিলাম্।
17.
প্রাতঃ – সকালবেলা – প্রাতঃ অহং ভ্রমণং করোমি। সকালে আমি ভ্রমণ করি।
18.
সায়ং – সন্ধ্যাবেলা – সায়ং রামঃ দেববন্দনং করোতি। সন্ধ্যায় রাম
দেবতার বন্দনা করে।
19.
দিবা – দুপুর – দিবা সর্বে কর্মব্যাপৃতাঃ তিষ্ঠন্তি। দুপুরে সকলে
কর্মব্যাপৃত থাকে।
20.
নক্তং – রাত্রিবেলা – নক্তং দধি ন ভোক্তব্যম্। রাত্রিবেলা দই খাওয়া
উচিৎ নয়।
21.
শনৈঃ – আস্তে – শনৈঃ গচ্ছ। আস্তে যাও।
22.
অকস্মাত্/সহসা – হঠাত্ – অকস্মাত্/সহসা সীতা হনূমন্তম্ বৃক্ষাগ্রে
অপশ্যত্।
23.
অধুনা – এখন – অহম্ অধুনা বিদ্যালয়ং গচ্ছামি। আমি এখন বিদ্যালয় যাচ্ছি।
24.
অন্যেদ্যুঃ/ অপরেদ্যুঃ – অন্যদিন - অন্যেদ্যুঃ/অপরেদ্যুঃ তস্য ধৃষ্টতাম্
অপাকরিষ্যামি। অন্যদিন তার ধৃষ্টতা দূর করব।
25.
অপিচ – আরও – অপিচ বদামি যত্ ত্বং মম পরমঃ সখা ইতি। আরও
বলি যে তুমি আমার পরম সখা।
26.
অবশ্যম্ –
নিশ্চিত – ছাত্রাঃ অবশ্যম্
ব্রহ্মচর্যব্রতং পালযেযুঃ। ছাত্রেরা অবশ্যই ব্রহ্মচর্যব্রত পালন করবে।
27.
অথ – অনন্তর – অথ ব্যাধাঃ বনং প্রাবিশন্। অনন্তর ব্যাধেরা বনে প্রবেশ করল।
28.
ইত্থম্ – এইরূপ
– ইত্থম্ বোধিতোऽপি দুর্যোধনঃ
কুরুক্ষেত্রসমরাত্ ন বিরতঃ অভবত্। এইরূপ বোঝালেও দুর্যোধন কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ থেকে
বিরত হল না।
29.
ইতি – এই – অহং বিদ্যালয়ং ন গমিষ্যামি ইতি উক্ত্বা বালিকা রোদনং প্রারভত। আমি স্কুল যাবো
না এই বলে বালিকাটি কান্না শুরু করল।
30.
উত – অথবা – সুনীলঃ মন্দিরং গচ্ছতি উত সুমন্তঃ? সুনীল মন্দির যাচ্ছে অথবা সুমন্ত।
31.
তু – কিন্তু – অর্জুনঃ কৃষ্ণস্য বাক্যং ন অববুদ্ধবান্, নারদঃ তু সম্যক্ অববুদ্ধবান্। অর্জুন কৃষ্ণের বাক্য বুঝতে পারলেন না, নারদ
কিন্তু ভালো বুঝেছিলেন।
32.
ঝটিতি – শীঘ্র –
বৃষ্টিরাগচ্ছতি, ঝটিতি গৃহং প্রবিশতু। বৃষ্টি
আসছে, শীঘ্র বাড়িতে প্রবেশ কর।
33.
ধ্রুবম্ –
নিশ্চিত – স্ত্রীহরণস্য পাপং
ধ্রুবং রাবণং নশ্যেত্। স্ত্রীহরণের পাপ নিশ্চয় রাবণকে নাশ করবে।
34.
ভূয়ঃ – পুনরায়,
অনেক – দ্রৌপদ্যাঃ কষ্টং
দৃষ্ট্বা অর্জুনঃ ভূয়ঃ অক্রন্দত্।
দ্রৌপদীর কষ্ট দেখে অর্জুন পুনরায়/অনেক কাঁদলেন।
35.
প্রাযঃ/প্রাযেণ- প্রায়ই,
অধিকস্থলে – প্রায়ঃ/প্রাযেণ
নরাঃ বুদ্ধিমন্তঃ ভবন্তি। মানুষেরা প্রায়ই বুদ্ধমান হয়।
36.
মিথ্যা –
মিথ্যা – মিথ্যা মা বদ। মিথ্যা
বলো না।
37.
সত্যম্- সত্য –
সদা সত্যং বদ। সবসময় সত্য বল।
38.
মুধা, বৃথা – ধনিনঃ নির্দয়াঃ ভবন্তি, মুধা/বৃথা
তেষাং দ্বারি পর্যটনং মা কুরু। ধনীরা
নির্দয় হল, তাদের দ্বারে বৃথা পর্যটন করবে না।
39.
সদ্যঃ/সপদি – তত্ক্ষণাত্ – গঙ্গাজলং যঃ স্পৃশতি, সদ্যঃ/সপদি
তস্য পাপং নশ্যতি। গঙ্গাজন যে স্পর্শ করে তত্ক্ষণাত্ তার পাপ নাশ হয়।
40.
পুনঃ – পুনরায় – পুনঃ সীতা অযোধ্যায়াঃ বনম্ অগচ্ছত্। পুনরায সীতা অযোধ্যা থেকে বনে
এলেন।
41.
যাবত্ – যতদিন- যাবত্ জীবেত্ সুখং জীবেত্। যতদিন বাচবে সুখে বাঁচো।
42.
স্থানে – উপযুক্ত – স্থানে তে প্রশ্নঃ। উপযুক্ত তোমার প্রশ্ন।।
43.
যুগপত্ – একসঙ্গে – গীতং শ্রুত্বা সর্বে যুগপত্ সাধু সাধু ইতি অকথয়ন্। গানটি শুনে সকলে
একসঙ্গে সাধু সাধু এই বলে উঠল।
44.
মনাক্ – ঈষত্ – বাক্যমাত্রং তস্য হৃদয়দাহং মনাগপি ন শময়তি। শুধুমাত্র বাক্য তার হৃদয়দাহকে একটুকুও শান্ত
করতে পারে নি।
45.
বরম্ – ভাল – দুষ্টানাং মিত্রতাপেক্ষয়া বরং শিষ্টানাং শত্রুতা। দুষ্টদের বন্ধুত্বের
অপেক্ষায় শিষ্টের সঙ্গে শত্রুতা ভালো।
46.
সকৃত্ – একবার –
শ্রীরামকৃষ্ণেণ সকৃত্ স্পৃষ্টঃ নরেন্দ্রঃ ব্রহ্মজ্ঞানম্ অলভত। শ্রীরামকৃষ্ণের
দ্বারা একবার স্পৃষ্ট নরেন্দ্র ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করেছিল।
47.
দিষ্ট্যা –
সৌভাগ্যক্রমে – দিষ্ট্যা অদ্য বৃষ্টিরভূত্, শীতলা জাতা পৃথিবী।
48.
জাতু – কখনো-
কামঃ ন জাতু শাম্যতি উপভোগেন।
49.
খলু –
নিশ্চয়,অনুনয়, প্রশ্ন,নিষেধ – ত্বং খলু দুর্যোধনঃ, দম্ভস্তে স্বাভাবিকঃ। ন খলু ন
খলু বাণঃ অস্মিন্ হরিণে সন্নিপাত্যঃ। খলু ত্বং শিক্ষকঃ? খলু গত্বা।
50.
অন্যথা –
অন্যপ্রকারে, নাহলে – ত্বং গৃহং গচ্ছ, অন্যথা তব পিতরম্ আহ্বযামি। ম বাক্যস্য অন্যথা ব্যাখ্যানং মাস্তু।
51.
কামম্ –
স্বীকার করি – কামং বিদ্যা ন সুলভা।
52.
তূষ্ণীম্ –
নীরবে - বালকাঃ গুরোঃ সমীপে তূষ্ণীং
তিষ্ঠন্তি।
53.
প্রসহ্য - বলপূর্বক – দুঃখং প্রসহ্য নয়নং প্লাবয়তি।
54.
মা – না – মা
খাদতু দিবা দধি।
55.
আম্ – হ্যাঁ
- আম্, রামঃ এব রাবণং হতবান্।
56.
হি – অবধারণ,
যেহেতু, বস্তুতঃ – রামো হি ধনুর্ধরাণাং শ্রেষ্ঠঃ। অগ্নিঃ অত্রাস্তি, ধূমো হি
দৃশ্যতে সমীপে। অন্নস্য গুরুত্বং হি বুভুক্ষবো জানন্তি।
57.
সাম্প্রতম্ - এখন, উচিত – সাম্প্রতং ভারতে গণতন্ত্রং
প্রচলতি। ইদানীং দুর্বলানাং নিষ্কারণং পী়ডনং ন সাম্প্রতম্।
প্রভাবি অব্যয়
(নীচে আলোচ্যমান অব্যয়সমূহ
অনুসারে অন্য পদের বিভক্তি পরিবর্তিত হয়)
58.
বিনা- ছাড়া - জ্ঞানং/জ্ঞানেন
(২য়া, ৩য়া) বিনা সুখং নাস্তি। জ্ঞান ছাড়া সুখ নেই।
59.
ঋতে- বিনা - জ্ঞানং/জ্ঞানাৎ
(২য়া, ৫মী) ঋতে সুখং নাস্তি। জ্ঞান ছাড়া সুখ নেই।
60.
অন্তরেণ – বিনা - জ্ঞানম্ (২য়া) অন্তরেণ সুখং নাস্তি। জ্ঞান ছাড়া সুখ
নেই।
61.
অন্তঃ – ভিতরে - গৃহস্য (৬ঠী) অন্তঃ জনাঃ সন্তি। ঘরের ভিতর মানুষেরা
আছে।
62.
বহিঃ – বাইরে - গৃহাৎ (৫মী) বহিঃ বৃক্ষাঃ সন্তি। ঘরের বাইরে গাছগুলি
আছে।
63.
প্রাক্/পূর্বম্ – আগে - শয়নাৎ
(৫মী) প্রাক্/পূর্বম্ জলং পিবতি। শোয়ার আগে জল পান করছে।
64.
পরম্/অনন্তরম্ – পর -
সূর্যোদয়াৎ (৫মী) পরম্/অনন্তরম্ জলং পিবতি। সূর্যোদয়ের পর জল পান করছে।
65.
পরিতঃ – চারপাশে - গ্রামং (২য়া) পরিতঃ বনম্ অস্তি। গ্রামের চারপাশে বন
আছে।
66.
সহ/সাকং/সার্ধং- সঙ্গে - রামেণ (৩য়া) সহ/সাকং/সার্ধং শ্যামঃ গচ্ছতি। রামের সঙ্গে শ্যাম
যাচ্ছে।
67.
অলম্ – সমর্থ (চতুর্থী বিভক্তি থাকলে) - অলম্ ভোজনায় (৪র্থী)। খেতে সমর্থ।
68.
অলম্ – নিষ্প্রয়োজন (তৃতীয়া) - অলম্ বিবাদেন (৩য়া)। বিবাদের কোনো দরকার নেই।
69.
উপরি – উপরে (ষষ্ঠী)- গৃহস্য উপরি বিড়ালঃ বর্ততে। ঘরের উপরে বিড়াল
রয়েছে।
70.
অধঃ/নীচৈঃ – নীচে(ষষ্ঠী)
– গৃহস্য অধঃ গুপ্তধনং বর্ততে। ঘরের নীচে গুপ্তধন আছে।
71.
নমঃ, স্বস্তি,
স্বাহা, স্বধা, বষট্ – (চতুর্থী)- কৃষ্ণায়
নমঃ। প্রজাভ্যঃ স্বস্তি। অগ্নয়ে স্বাহা। পিতৃভ্যঃ স্বধা। ইন্দ্রায় বষট্।
72.
পৃথক্ – আলাদা (পঞ্চমী) - রামঃ বলরামাত্ পৃথক্ শস্ত্রং প্রযুক্তবান্।
73.
কৃতম্ – নিষেধ (তৃতীয়া) - কৃতম্ কালাপব্যয়েন।
74.
আরাত্ – নিকটে (দ্বিতীয়া)- গ্রামম্ আরাত্
বনম্ অস্তি।
75.
অন্তরা – মাঝে (ষষ্ঠী)- ত্বাং মাং চ অন্তরা পুষ্পাণি সন্তি।
76.
সমন্তাত্ – চারপাশে (ষষ্ঠী) - গৃহস্য সমন্তাত্ বৃক্ষাঃ সন্তি।
অব্যয়যোগে প্রশ্নবাক্য নির্মাণ
77.
কিম্ – ত্বং কিং গৃহং গচ্ছসি? তুমি কি বাড়ি যাচ্ছো? (এখানে কিম্ অব্যয়
দিয়ে প্র্শ্নবাক্য নির্মাণ করা হল)।
78.
কিমু – নির্বাপিতে দীপে কিমু তৈলদানম্?
79.
খলু – খলু ত্বং গচ্ছসি? তুমি কি যাচ্ছো?
80.
কুত্র/ক্ব – ভবান্ কুত্র
গচ্ছতি? আপনি কোথা যাচ্ছেন?
81.
কদা – রামঃ কদা গৃহং গচ্ছতি? রাম কখন বাড়ি যায়?
82.
কুতঃ – ত্বং কুতঃ আগতঃ? তুমি কোথা
থেকে এলে?
83.
কথম্ – ত্বং কথম্ অদ্য বিদ্যালয়ং গচ্ছসি? তুমি কিভাবে আজ বিদ্যালয় যাচ্ছো?
তুমি কেমন আছো? ত্বং কথম্ অসি? সিনেমাটা কেমন? চলচ্চিত্রং কথম্ অস্তি?
তুমি কেমন আছো? ত্বং কথম্ অসি? সিনেমাটা কেমন? চলচ্চিত্রং কথম্ অস্তি?
84.
কিমর্থং – কিমর্থং ছাত্রাঃ বিদ্যালয়ং গচ্ছন্তি? কিজন্য ছাত্রেরা বিদ্যালয় যায়?
85.
কিল – বস্তুতঃ,
সম্ভাবনা, ঐতিহ্যবোধক – রামঃ কিল রাবণং
হতবান্। ঐতিহাসিকাঃ কিল সত্যম্ উদ্ঘাটযেত্। কলিকাতা কিল মহানগরী, অতঃ মার্গভ্রমঃ
অত্র সুতরাং জায়তে।
কিছু
বিশেষ ব্যবহার
যদি-তর্হি – যদি তাহলে – যদি ভবান্ ভগবন্তং নমতি তর্হি ভগবান্ আশীর্বাদং দাস্যতি। যদি আপনি ভগবানকে
প্রণাম করেন তাহলে ভগবান্ আশীর্বাদ দেবেন।
যতঃ অতঃ – যেহেতু তাই –
যতঃ রামঃ ধনম্ অপহরতি অতঃ আরক্ষকাঃ তং কারাগারে স্থাপয়ন্তি। যেহেতু রাম ধন অপহরণ
করে তাই পুলিশেরা তাকে কারাগারে রাখে।
যস্মাৎ তস্মাৎ - যেহেতু তাই – যস্মাৎ রাবণঃ সীতাং পীড়য়তি তস্মাৎ রামঃ রাবণং প্রতি
ক্রুধ্যতি। যেহেতু রাবণ সীতাকে পীড়া দেয় তাই রাম রাবণের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়।
চেৎ - হলে – ত্বং গৃহং গচ্ছসি চেৎ অহং প্রেক্ষাগৃহং
গমিষ্যামি। তুমি বাড়ি গেলে আমি সিনেমা যাব। (যদি তর্হি এর জায়গায় চেৎ
প্রয়োগ করা যায়)।
যদ্যপি তথাপি – যদিও
তথাপি – যদ্যপি গৃহে তস্করাঃ সন্তি তথাপি আরক্ষকা ন আগচ্ছন্তি। যদিও বাড়িতে চোর
রয়েছে তথাপি পুলিশ আসছে না।
যথা – তথা – যেমন-তেমন
– যথা রামঃ সুন্দরঃ তথা শ্যামঃ অপি সুন্দরঃ। রাম যেমন সুন্দর তেমন শ্যামও সুন্দর।
যদা – তদা – যখন-তখন – যদা ত্বং গৃহং গচ্ছসি তদা রামঃ গায়তি। তুমি যখন বাড়ি যাও
তখন রাম গান করে।
যত্র – তত্র – যেখানে
– সেখানে – যত্র অর্জুনঃ ধনুর্বিদ্যাম্ অভ্যস্যতি তত্র সুভদ্রা দণ্ডায়মানা
তিষ্ঠতি। যেখানে অর্জুন ধনুর্বিদ্যা অভ্যাস করে সেখানে সুভদ্রা দাঁড়িয়ে থাকে।
যাবৎ-তাবৎ - যতটা-ততটা – সঃ যাবৎ গচ্ছতি রামঃ তাবৎ ন গচ্ছতি। সে যতটা যায় রাম ততটা যায়
না।
যাবৎ দুঃখম্ অহম্ অনুভবামি তাবৎ ন কো’পি অনুভবতি। আমি যতটা দুঃখ অনুভব করছি ততটা কেউ অনুভব করে না।
এরূপ লিঙ্গ অনুসারে যাবান্-তাবান্, যাবতী-তাবতী ইত্যাদি ব্যবহারও হয়ে থাকে।
চিৎ এবং
চন দিয়ে পদ নির্মাণ
তিন লিঙ্গে বর্তমান কিম্ শব্দের সঙ্গে চিৎ বা চন প্রত্যয়
যোগ করে পদ নির্মাণ করা হয়। এই দুই প্রত্যয় দিয়ে নিষ্পন্ন শব্দটি অনির্দিষ্ট কাউকে
বোঝায়।
কিম্-শব্দের (পুংলিঙ্গে) রূপ এবং চিৎ চন প্রত্যয় যোগ করে
লব্ধ রূপ
একবচন
|
চিৎ/চন
|
দ্বিবচন
|
চিৎ/চন
|
বহুবচন
|
চিৎ/চন
|
|
প্রথমা
|
কঃ
|
কশ্চিৎ/ কশ্চন
|
কৌ
|
কৌচিৎ/ কৌচন
|
কে
|
কেচিৎ/কেচন
|
দ্বিতীয়া
|
কম্
|
কঞ্চিৎ/ কঞ্চন
|
কৌ
|
কৌচিৎ/ কৌচন
|
কান্
|
কাংশ্চিৎ/কাংশ্চন
|
তৃতীয়া
|
কেন
|
কেনচিৎ/ কেনচন
|
কাভ্যাম্
|
কাভ্যাঞ্চিৎ/ কাভ্যাঞ্চন
|
কৈঃ
|
কৈশ্চিৎ/কৈশ্চন
|
চতুর্থী
|
কস্মৈ
|
কস্মৈচিৎ/ কস্মৈচন
|
কাভ্যাম্
|
কাভ্যাঞ্চিৎ/ কাভ্যাঞ্চন
|
কেভ্যঃ
|
কেভ্যশ্চিৎ/ কেভ্যশ্চন
|
পঞ্চমী
|
কস্মাৎ
|
কস্মাচ্চিৎ/ কস্মাচ্চন
|
কাভ্যাম্
|
কাভ্যাঞ্চিৎ/ কাভ্যাঞ্চন
|
কেভ্যঃ
|
কেভ্যশ্চিৎ/কেভ্যশ্চন
|
ষষ্ঠী
|
কস্য
|
কস্যচিৎ/ কস্যচন
|
কয়োঃ
|
কয়োশ্চিৎ/ কয়োশ্চন
|
কেষাম্
|
কেষাঞ্চিৎ/কেষাঞ্চন
|
সপ্তমী
|
কস্মিন্
|
কস্মিংশ্চিৎ/কস্মিংশ্চন
|
কয়োঃ
|
কয়োশ্চিৎ/কয়োশ্চন
|
কেষু
|
কেষুচিৎ/কেষুচন
|
কশ্চন বা কশ্চিৎ মানে কেউ একজন। কেউ অর্থে কেচিৎ বা কেচন
প্রয়োগ করা হয়। কেনচিৎ মানে কোনো একজনের দ্বারা। কোনো একজনের এই অর্থে কস্যচিৎ। এরকম স্ত্রীলিঙ্গেও কাচিৎ/কাচন এবং নপুংকলিঙ্গে কঞ্চিৎ/কঞ্চন হয়।
এবার নীচের অনুবাদগুলি দেখে নিন, সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।
তাকে কেউ জানে না – তং কশ্চিৎ/কশ্চন ন জানাতি।
কেউ কেউ হোমওয়ার্ক করেছিল - কেচিৎ/কেচন গৃহকার্যম্ অকুর্বন্।
কারোর দ্বারা একাজ হবে না - কেনচিৎ/কেনচন এতৎ কার্যং ন ভবিষ্যতি।
[1] অনেক সময় সংশয় হয় যে ‘আমি তুমি ও সে যাচ্ছি’ – এখানে ক্রিয়া কি ‘আমি’ অনুসারে উত্তম পুরুষ একবচন হবে, ‘তুমি’অনুসারে মধ্যম পুরুষ একবচন হবে অথবা ‘সে’ অনুসারে প্রথম পুরুষ একবচন হবে। সেক্ষেত্রে নিয়ম হল – উত্তম পুরুষ কর্তা হিসাবে সবচেয়ে
প্রভাবশালী, তারপর মধ্যম পুরুষ এবং সবশেষে প্রথম পুরুষ। মানে এরকম দাঁড়ায় – উত্তম
পুরুষ > মধ্যম পুরুষ > প্রথম
পুরুষ। তাই ‘অহং ত্বং স চ
গচ্ছামঃ’ এই রকম অনুবাদ হবে। লক্ষ্য কর আমরা একই নিয়ম
বাংলাতেও অনুসরণ করি। ‘আমি তুমি ও সে যাচ্ছি’ এরকম প্রয়োগ হয়, এক্ষেত্রে আমরা ‘যাচ্ছে’ বলি না। ‘তুমি ও রাম যাচ্ছো’
এরকম প্রয়োগ হয়, ‘যাচ্ছে’ এরকম প্রয়োগ
হয় না।
আরেকটি কথা – ‘রাম হরি ও যদু যাচ্ছে’ এখানে রামঃ হরিঃ যদুশ্চ
গচ্ছন্তি এরকম অনুবাদ করা হয়।